Pages

Tuesday, September 27, 2011

মার্জিন ঋণ সমস্যা সমাধানে সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ সালমান এফ রহমানের প্রস্তাব

 পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক মন্দার কারণে আটকে পড়া বিপুল পরিমাণ মার্জিন ঋণের কারণে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান ও গ্রাহকদের সমস্যা সমাধানে একটি গ্রহণযোগ্য উপায় নির্ধারণের চেষ্টা চলছে। আটকে পড়া মার্জিন ঋণের দায় গ্রহণের জন্য চার থেকে পাঁচ হাজার কোটি টাকা তহবিল সমৃদ্ধ একটি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি প্রতিষ্ঠা নিয়ে ইতোমধ্যেই বাজার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পৰের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। সকল পৰের কাছ থেকে ইতিবাচক মতামত পাওয়া গেলে শীঘ্রই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে বলে সংশিস্নষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের উদ্যোগে গত সপ্তাহে মার্জিন ঋণ সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে আলোচনা শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে দুই স্টক এক্সচেঞ্জসহ বেসরকারী খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে একটি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করা হয়। চার থেকে পাঁচ হাজার কোটি টাকার তহবিল নিয়ে প্রতিষ্ঠিত ওই কোম্পানির মাধ্যমে মার্জিন ঋণের মাধ্যমে কেনা শেয়ারের দায় গ্রহণ করার প্রস্তাব রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যেই স্টক এক্সচেঞ্জ, মার্চেন্ট ব্যাংক, বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তহবিল গঠন ও এর কার্যকারিতার ৰেত্রে আইনী দিকও পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে সালমান এফ রহমান গত সপ্তাহে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, 'মার্জিন ঋণ নিয়ে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে এসইসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে। দুই স্টক এঙ্চেঞ্জ ও লিজিং কোম্পানিগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা একটি প্রক্রিয়া ঠিক করার চেষ্টা করছি। বিষয়টি অনেক দূর অগ্রসর হয়েছে।'
সূত্র জানায়, সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি গঠনের বিষয়ে সালমান এফ রহমান ব্যক্তিগতভাবে প্রায় সব পৰের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁর এই তৎপরতা নিয়ে প্রথম দিকে ঢাকা স্টক এঙ্চেঞ্জের (ডিএসই) একাধিক পরিচালক নেতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করছিলেন। ইতোমধ্যেই সালমান এফ রহমান ওই পরিচালকদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছেন। গত শনিবার সন্ধ্যায় এ বিষয়ে আলোচনার জন্যই ডিএসইর দুই সাবেক সভাপতির সঙ্গে বৈঠক করেন। আগামীকাল (বুধবার) পরিচালনা পর্ষদ সভায় মার্জিন ঋণ সংক্রানত্ম উদ্যোগের বিষয়ে ডিএসইর অবস্থান নির্ধারিত হতে পারে।
এদিকে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যনত্ম মার্জিন ঋণের সুদ মওকুফ এবং মূল ঋণ পরিশোধের জন্য দীর্ঘমেয়াদে সময় নির্ধারণের পৃথক একটি প্রসত্মাব নিয়েও বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা চলছে। এই প্রসত্মাব অনুযায়ী বাণিজ্যিক ব্যাংকের খেলাপী ঋণ পুনঃতফসিলীকরণের (রিসিডিউল) করার মতো কয়েক বছর ধরে কিসত্মিতে মার্চেন্ট ব্যাংকের মার্জিন ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা রাখা হবে। আর পুনঃতফসিলের তারিখ থেকে ওই ঋণের ওপর কোন ধরনের সুদ আরোপ না করার প্রসত্মাব করা হয়েছে। এছাড়া শেয়ারবাজারে বিপর্যয়ের পর থেকে এ পর্যনত্ম ধার্য করা সব ধরনের সুদ মওকুফের আরেকটি প্রসত্মাবও আলোচনায় রয়েছে।
উলেস্নখ্য, শেয়ারবাজারে বিপর্যয়ের ফলে মার্চেন্ট ব্যাংক বা ব্রোকারেজ হাউস থেকে মার্জিন ঋণ নিয়ে শেয়ার কেনা বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে বেশি লোকসানের মুখে পড়েছেন। বাজার দর যে অবস্থানে নেমেছে তাতে শেয়ার বিক্রি করে ঋণ শোধ করতে গেলে বিনিয়োগকারীর নিজের টাকার প্রায় পুরোটা চলে যাবে। গত ফেব্রম্নয়ারিতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে মার্চেন্ট ব্যাংকের কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে মার্জিন ঋণের সুদ মওকুফের বিষয়টি আলোচনায় এসেছিল। তবে পরবর্তীতে এ বিষয়ে কোন পৰই বিষয়টি নিয়ে আর অগ্রসর হয়নি। তবে সম্প্রতি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) হিসাবধারী বিনিয়োগকারীরা লিখিতভাবে সুদ মওকুফের জন্য আবেদন জানিয়েছেন। পাশাপাশি সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এঙ্চেঞ্জ কমিশনে (এসইসি) দেয়া স্মারকলিপিতেও আইসিবি ইনভেস্টরস ফোরামের পৰ থেকে বাজার ধস থেকে শুরম্ন করে পুঁজিবাজার স্থিতিশীল না হওয়া পর্যনত্ম মার্জিন ঋণের ওপর আরোপিত সকল সুদ মওকুফের দাবি জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে পুঁজিবাজার ধসের পর রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান আইসিবি ৰতিগ্রসত্ম বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণের সুদ মওকুফ করেছিল। এতে বিপুলসংখ্যক বিনিয়োগকারী বড় অঙ্কের ক্ষতির হাত থেকে রৰা পেয়েছেন। পাশাপাশি আইসিবির পৰেও আটকে যাওয়া ঋণ আদায় সহজ হয়েছিল।
দৈনিক জনকন্ঠ - মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১১

No comments:

Post a Comment