Pages

Monday, October 10, 2011

জীবন বীমা তহবিলের সঞ্চিত অর্থের নির্ধারিত অংশ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের নির্দেশ

জীবন বীমা তহবিলের সঞ্চিত অর্থের নির্ধারিত অংশ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)। গতকাল রোববার বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) তিন সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এসইসির এক বৈঠকে এ নির্দেশ দেয়া হয়।
অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ কবির হোসেন বলেন, ‘জীবন বীমা তহবিলের প্রায় ১৪ হাজার কোটির বেশি টাকা অলসভাবে ব্যাংকে পড়ে আছে। এই টাকা কীভাবে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা যায়, তা নিয়ে আমরা কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেছি। কমিশন এ ক্ষেত্রে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। তারা আমাদের একটি প্রস্তাব দিতে বলেছে। এর ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তারা। এখন আমরা সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি প্রস্তাব তৈরি করব।’
কিন্তু বীমা কোম্পানিগুলো বাজারের এ পরিস্থিতিতে বিনিয়োগ করতে সাহস পাচ্ছে না। প্রতিদিনই যেভাবে সূচকের পতন হচ্ছে তাতে জীবন বীমা তহবিলের টাকা বিনিয়োগে ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করেন বীমা অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা। দেশে বেসরকারি খাতের ১৭টি জীবন বীমা কোম্পানির লাইফ ফান্ডের ১৪ হাজার কোটি টাকা অলস পড়ে আছে। এ অর্থ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোয় পড়ে থাকলেও চড়া সুদের কারণে তা শিল্পায়নের কাজে আসছে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সম্প্রতি বিষয়টি বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষেরও নজরে এসেছে। বিনিয়োগ স্বাধীনতা না থাকায় বিপুল পরিমাণ এ অর্থ বিভিন্ন ব্যাংকে স্থায়ী আমানত হিসেবে গচ্ছিত রয়েছে বলে জানা গেছে।
বীমা আইন অনুযায়ী, জীবন বীমা কোম্পানিগুলোকে তাদের মোট তহবিলের ৫০ শতাংশ অর্থ বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকে স্থায়ী আমানত হিসেবে রাখতে হয়। এ ছাড়া মোট তহবিলের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ অর্থ তারা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে পারে। অবশিষ্ট ২০ শতাংশ অর্থ সরকারি বন্ডসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে পারে। বীমা আইনের এসব নীতিমালার কারণে জীবন বীমা কোম্পানিগুলোর তহবিল অলস পড়ে থাকে বলে জানা গেছে।
বীমা কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ নীতিমালার আইনটি ‘ইন্স্যুরেন্স অ্যাক্ট ১৯৩৮’ অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে। পুরনো এ আইনের কারণেই বীমা কোম্পানিগুলোর তহবিলের বহুমুখী বিনিয়োগ সম্ভব হচ্ছে না বলে জানা গেছে। অপরদিকে বীমা কোম্পানিগুলোর জন্য নতুন বিনিয়োগ নীতিমালা তৈরি করা সম্ভব হয়নি এখনো। আইনের ফাঁদে পড়ে যথেষ্ট চাহিদা থাকা সত্ত্বেও বিপুল পরিমাণের অর্থ উত্পাদনশীল খাতে বিনিয়োগ করতে পারছে না সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। 
জানা গেছে, বিশ্বের নামিদামি জীবন বীমা কোম্পানির রয়েছে নিজস্ব মিউচুয়াল ফান্ড। এদের মধ্যে অন্যতম আমেরিকার এআইজি লাইফ, প্রুডেনশিয়াল ফিন্যান্সিয়াল, মেটলাইফ, জার্মানির অ্যালিয়াঞ্জ ওয়ার্ল্ড ওয়াইড, ইতালির জেনারেলি গ্রুপ, যুক্তরাজ্যের আভিভা ও কানাডার ম্যানুলাইফ। এসব কোম্পানি প্রিমিয়ামের বড় একটা অংশ মূল কোম্পানির লাভজনক প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করে। বাকিটা নিজস্ব মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করে। এরপর যা থাকে তা শেয়ারবাজারের মৌলভিত্তির শেয়ারে বিনিয়োগ করে। উন্নত বিশ্বে ব্যাংক সুদের হার কম হওয়ায় এসব দেশের বীমা কোম্পানিগুলো ব্যাংকে আমানত হিসেবে বিনিয়োগ করে না। কিন্তু বাংলাদেশে উচ্চ সুদের হারের কারণে বীমা কোম্পানিগুলো প্রিমিয়ামের টাকা ব্যাংকে ফেলে রাখতেই পছন্দ করে।

News Source


No comments:

Post a Comment